১
প্রিয়তমা আমার
তেমার শেষ চিঠিতে
তুমি লিখেছ;
“মাথা আমার ব্যথায় টন্ টন্ করছে
দিশেহারা আমার হৃদয়”।
তুমি লিখেছ;
“যদি ওরা তেমাকে ফাঁসী দেয়
তেমাকে যদি হারাই
আমি বাঁচব না”।
তুমি বেঁচে থাকবে প্রিয়তমা বধু আমার
আমার স্মৃতি কালো ধোঁয়ার মত হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে
তুমি বেঁচে থাকবে, আমার হৃদয়ের রক্তকেশী ভগিনী,
বিংশ শতাব্দীতে
মানুষের শোকের আয়ূ
বড় জোর এক বছর।
মৃত্যু..
দড়ির এক প্রান্তে দোদুল্যমান শবদেহ
আমার কাম্য নয় সেই মৃত্যু।
কিন্তু প্রিয়তমা আমার, তুমি জেনো
জল্লাদের লোমশ হাত
যদি আমার গলায়
ফাঁসীর দড়ি পরায়
নাজিমের নীল চোখে
ওরা বৃথাই খুঁজে ফিরবে ভয়।
অন্তিম ঊষার অস্ফুট আলোয়
আমি দেখব আমার বন্ধুদের,তোমাকে দেখব
আমার সঙ্গে কবরে যাবে
শুধু আমার
এক অসমাপ্ত গানের বেদনা।
এখন সন্ধ্যা,
দিগন্তের শেষ আলো মিলিয়াছে আধারে
কুয়াশার চাদর জড়িয়ে গায়
রুক্ষ বসুধা মাখিছে শিশির আপন মমতায়
করিতে শিতল বিবস্ত্র হিয়ারে
এমনো দিনে বসিয়া নিভৃত গৃহ কোনে
যেন কার শাড়ির আচল পড়িতেছে মনে
আপন হৃদয়উষ্ণতার উৎস সন্ধানে
কাহারে?
কেউ নয় ! কেউ নয় ! শুধু তোমারে
সে কোন অসীম সুদুরে বসি তুমি
আধো আলো ছায়া ঢাকা নমনীয় স্বপ্নভূমি
হেথা নিসঙ্গ নিরালায় চক্রেপিষ্ঠ বেদনায়
নিষিদ্ধ স্বপ্ন পতনের দিন গুনি
স্বপ্নকে মুঠিতে ধরে তোমাকে আপন করে
নতুন দিনের অনাগত যুগল স্বপ্ন বুনি
কোন এক জোসনাস্নাত বৃষ্টির রাতে তুমি আর আমি
এসো হে নারী
তোমাতে অবগাহন করি
নিমগ্ন হব তব মাঝে
আপন অস্তিত্বের সন্ধানে।
সমুদ্র বিহারী ক্লান্ত প্রাণ
আমি তোমার কোমল মাটিতে
মিশে যেতে চাই আমার আমিতে
র্কষনে র্বষনে সিক্ত তোমার উত্ত্ত ভূমি
আশ্রয় দাও করুনা করে
আগামীর আমিকে।
ভালোবাসা মানে
তোমার আমার রক্তে লেখা চিঠি
ভালোবাসা মানে
দুটি মনের অবুঝ প্রেম প্রীতি
ভালোবাসা মানে
জেগে থাকা নির্ঘুম সারারাত
ভালোবাসা মানে
নির্জনে বসে হাতে রাখা দুটি হাত
ভালোবাসা মানে
নিবিড় ছোয়ায় মুগ্ধ সারাটিক্ষন
ভালোবাসা মানে
শান্তিসুখের সুখের তোমার আমার জীবন
ভালোবাসা মানে
রাধার কানে শ্যামের বাশের বাঁশি
ভালোবাসা মানে
অভিমান ভেঙ্গে তোমার মুখের হাঁসি
ভালোবাসা মানে
তোমার মুগ্ধ সলাজ দু-নয়ন
ভালোবাসা মানে
তোমার দুষ্টু ঠোটের উষ্ণ চুম্বন
ভালোবাসা মানে
র্নিজন রাতে পাশাপাশি বসে এক আকাশ তারা গোনা
ভালোবাসা মানে
তোমার বুকে মাথা রেখে স্বপ্নের জাল বোনা
ভালোবাসা মানে
অচেনা চেনাকে তুমি বলে কাছে ডাকা
ভালোবাসা মানে
আগামীর ক্যানভাসে রঙ্গীন ছবি আকা
ভালোবাসা মানে
একাকি দীর্ঘ পথে তোমার পাশে চলা
ভালোবাসা মানে
মনের যত না বলা কথা বলা
ভালোবাসা মানে
তোমার কপালের টিপে সূর্যের অস্ত যাওয়া
ভালোবাসা মানে
দুজনে মিলে প্রেমের তরী বাওয়া
ভালোবাসা মানে
পূর্ণ হৃদয়ের নিরব কিছু ভাষা
ভালোবাসা মানে
ভালোবাসা।
সে কোন কল্পলোকে থাকো তুমি
জন্ম বধির অন্ধ ইশ্বর?
থাকো তুমি সবখানে, এমনি
শুনেছিলাম বটে, অথচ-
দেখলাম না কোনদিন তোমায়
উকি দিতে গরিবের দেওড়িতে।
আগে নাকি এসেছ দু-একবার
পথ ভুলে উদ্ভ্রানত পথিকের মত,
এখন বাজার দর তোমার মেজাজের মতই চড়া
নিরামিষ খাবার পাল্লা এখন চলে সমানে
গরিবে আর টিকিধারী ব্রাক্ষ্মনে
হজমের গোলমাল আছে বুঝি তোমার
মোটা চাল আর নিরামিষের ভয়ে
ভুলেও এ পথ মাড়াও না।
পদ্মা নদীর মাঝি কুবেরের মুখে শুনেছিলাম
'ইশ্বর থাকেন ঐ ভদ্র পল্লীতে'
কই? কতোই তো খুজলাম তাকে
শহরের অলিতে গলিতে,
এখানেও থাকেন না তিনি।
যানযট আর কালো ধোয়া
একদম অপছন্দ তার।
মানুষে পূর্ণ শহরের অপূর্ণতা
পুরনের মন্ত্রটা জানা ছিল তার
বহুদিন মুখে আসেনি
এখন ভুলে গেছেন তিনি।
মানুষের সঙ্গকে বড় ভয় তাঁর
পাছে মানুষের সাথে মিশে
তিনিও মানুষের মত মানুষ বনে যান
তাই ছেড়ে দিয়ে পৃথিবীকে
চলতে আপন গতিতে
বৃদ্ধাশ্রমের মত তিনিও আশ্রয় খোজেন
মানুষের তৈরি কল্পলোকে।
আজ উথলি উঠেছে প্রাণ না জানি
কোন অচেনা সুরের টানে-
আদরে মরিতে।
সকল বাধা দুপায়ে দলিয়া
ব্যাকুলিছে হিয়া তোমাপানে-
বক্ষে জড়িতে।
ওরে কেমনে রূধিব সে প্রানের আকুতি
যে প্রাণ সপেছি তোমার করে।
পতঙ্গ জানে মরিবে পুড়িয়া
তবুও লাফিয়ে পড়ে-
অগ্নী ভূমিতে।
পতঙ্গপ্রায় হৃদয় মোর
পুড়িছে তোমার তরে-
অধর চুমিতে।
পতঙ্গের সুখ মরনেই
সে যে ছুয়েছে অগ্নী-
কাছে এসে।
আমি চাই তুমি মোরে
জড়িয়ে রাখো বুকে-
ভালোবেসে।
প্রানের এ আকুতি মিনতি রূপে
পাঠালাম তোমার তরে-
হাওয়ার চিঠিতে।
কিছু চাইনা আর, শুধু
তোমার ক্ষীণ পরশ দাও মোরে-
বাসনা মিটিতে।